পাঠকের কাছে অনুরোধঃ এটা একটা শিক্ষনীয় ব্লগ।এই ব্লগ/ওয়েবকে চটি সাইট মনে করার কোন অবকাশ নাই। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা যৌনতা সম্পর্কে কি এবং কতটুকুই বা জানি? পশ্চিমা দেশের ১৬-১৮ বছরের ছেলে-মেয়েরা যৌনতার ব্যাপারে যা জানে, আমাদের দেশে বিয়ের ১৫ বছর পরে ও আমরা তা জানতে পারিনা, বুঝতে পারিনা। তাই আমার এই প্রচেষ্ঠা। এই ব্লগের লেখা দিয়ে যদি কারো কোন উপকার হয়, তাহলেই আমার কষ্ট সার্থক হবে। পুনশ্চঃ ব্লগটি চালু রাখতে, ডোনেশন করুন।আপনার ছোট্ট একটু কমেন্ট আমাকে অনেক প্রেরনা দেবে।দয়া করে Facebook এ একটা Like দিন। সবাইকে ধন্যবাদ।

রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১১

স্প্যাসমোডিক ডিজমেনোরিয়া (পিরিয়ডের সময় পেটব্যাথা)

চেম্বারে সে দিন ১৫/১৬ বছরের মেয়েকে দেখলাম তার তিনজন মহিলা আত্বীয় ধরে ধরে নিয়ে আসছেন। মেয়েটি পেটব্যাথায় প্রায় কুকরে গেছে, হাঁপাচ্ছে, কাঁদছে।
কী হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে তার মা বললেন, প্রতেয়ক মাসে “মাসিক” হওয়ার সময় সে ব্যাথায় প্রায় অজ্ঞান হয়ে যায়। মেয়েটির নাম জানালাম আফসানা খাতুন (কাল্পনিক মাম)। আজ একেবারে অসহনীয় হওয়ায় পাড়াপড়শিরা বলেছে শিগগির ডাক্তার দেখাও। চিকিৎসা না হলে এর বিয়েসাদি হবেনা।


অল্পবয়সী মেয়েদের এটি একটি খুবই সাধারন সমস্যা।

কারনঃ
@ বয়ঃসন্ধিকালের মেয়েদের অত্যাধিক মানসিক চাপ ও চাঞ্চল্য।
@ দুশ্চিন্তা।
@ জরায়ুর অস্বাভাবিক গঠন।
@ জরায়ুর পেশির প্রবল সংকোচন।
@ দুর্বল শারীরিক গঠন।
@ শারীরিক ও মানসিক অবসাদ।
@পিরিয়ডের সময় জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে অতিরিক্ত পরিমান প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন হরমোন নিঃসরন । ইত্যাদি।

লক্ষনঃ

@ পিরিয়ড শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে বা শুরুর সময় ব্যাথা হয় এবং তা ২-৩ ঘন্টা থেকে আরম্ভ করে ২৪ ঘ্নটার মতো থাকতে পারে।
@ এই ব্যাথা তলপেট ও কোমর থেকে দুই উরুর উপরের অংশে প্রসারিত হয়।
@ কখনও বমি বমি ভাব বা বমি হয়।ক্লান্তি , ডায়রিয়া, মাথাধরা থাকতে পারে।
@ এমনকি, মেয়েটি অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসাঃ

উপযুক্ত খাদ্য,পুষ্টি ও টিকমত বিশ্রাম দরকার। সাধারন স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো। রোগীকে আস্বস্ত করা। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা ঠিক করা - এই গুলি করা দরকার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল (যেমনঃ নরডেট-২৮,মিনিকন,ফেমিকন ইত্যাদি) পিরিয়ডের পঞ্চম দিন থেকে মাসে একুশটি করে কয়েক মাস খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আজকাল পিরিয়ডের সম্ভাব্য তারিখের সাতদিন আগে থেকে ভিটামিন বি৬ ট্যাবলেট প্রয়োগ করে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়।
একটা কথা বলা দরকার, পিরিয়ডের সময়ে কিছু পরিমান ব্যাথা ও অস্বস্তি প্রায় সম মহিলারই হয়ে থাকে । কারও কারও ঋতুমতী হওয়ার প্রথম ২-১ বছর কোনও ব্যাথা থাকে না। তার সুত্রপাত হয় কিছুদিন পরে, যখন ওভারি থেকে ডিম্বানু নির্গমন বা ওভিউলেশন শুরু হয়।
আর বিভিন্ন মানুষের বেদনা বোধের অনুভূতির তারতম্য আছে । যে সব মেয়ে নেহাতই অজ্ঞ (এই রোগের বিষয়ে) হয় , বেশি ভিতু হয়, তাদের ব্যাথা বোধও প্রকট হয়ে ওঠে। অনেকে আবার সুযোগ বুঝ ব্যাথার দোহাই দিয়ে স্কুল বা কলেজ কামাই করে। দুর্বল মনের মা-বাবা অত্যাধিক আদিখ্যেতা করলে খুব ঝামেলা - ব্যাথা আরও বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের উওপদেশই সবচেয়ে ভাল। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তো কোনও ওষুধ খাওয়াই যাবে না। বিবাহ বা সন্তান হওয়ার পর এই সমস্যা আপনা থেকেই মিটে যায় । গ্রামের মানুষরা একে “বাধকের ব্যাথা” বলে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Bird Gadget