পাঠকের কাছে অনুরোধঃ এটা একটা শিক্ষনীয় ব্লগ।এই ব্লগ/ওয়েবকে চটি সাইট মনে করার কোন অবকাশ নাই। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা যৌনতা সম্পর্কে কি এবং কতটুকুই বা জানি? পশ্চিমা দেশের ১৬-১৮ বছরের ছেলে-মেয়েরা যৌনতার ব্যাপারে যা জানে, আমাদের দেশে বিয়ের ১৫ বছর পরে ও আমরা তা জানতে পারিনা, বুঝতে পারিনা। তাই আমার এই প্রচেষ্ঠা। এই ব্লগের লেখা দিয়ে যদি কারো কোন উপকার হয়, তাহলেই আমার কষ্ট সার্থক হবে। পুনশ্চঃ ব্লগটি চালু রাখতে, ডোনেশন করুন।আপনার ছোট্ট একটু কমেন্ট আমাকে অনেক প্রেরনা দেবে।দয়া করে Facebook এ একটা Like দিন। সবাইকে ধন্যবাদ।

বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪

সন্তানকে স্তন্যদানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ


এতকাল পর্যন্ত এটাই জানা ছিল যে বুকের দুধ পান নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। এই দুধ বাচ্চাকে রাখে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে রাখে বৃদ্ধিতে অনন্য ভূমিকা। তবে বুকের দুধ শুধু নবজাতকেরই নয় মায়েরও অনেক সুফল বয়ে আনে। এছাড়া নবজাতককে বুকের দুধ পান করালে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ প্রতিরোধও সম্ভব। মা-শিশুর মধ্যে মানসিক সম্পর্ক স্থাপনে মাতৃদুগ্ধের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সঠিক নিয়ম ও পর্যাপ্ত দুগ্ধ দান মাকে স্তন ক্যান্সারের হাত থেকেও রক্ষা করে। শিশুকে দুধ পান করালে গর্ভবতী অবস্থায় জমে
থাকা অতিরিক্ত মেদ কমে যায় এবং সুন্দর দেহ সৌষ্ঠব গড়ে উঠে।একটি সন্তান হওয়ার পর মাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হওয়ার জন্য কিছুটা সময় নেওয়া প্রয়োজন। মায়ের শরীর ও জরায়ু পুনরায় গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত হতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগে। কারণ তার শরীর থেকে যে রক্ত ক্ষয় হয় তা পুনরায় তৈরি হতে এই সময় দরকার। কিন্তু কোনো কারণে জরায়ু প্রস্তুত হওয়ার আগেই গর্ভধারণ করলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। মাও তার পূর্ববর্তী সন্তানের যত্ন ঠিকমতো নিতে পারবেন না।

সন্তানকে বুকের দুধ পান করালে মায়ের ডিম্ব অকার্যকর হয়ে প্রাকৃতিক উপায়েই জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যদি একজন মা নিয়মিত তার বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করান তবে তার শরীরে প্রোজেস্ট্রনসহ বেশ কিছু হরমোন নিঃসরনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে তিনি সাময়িকভাবে গর্ভধারণের হাত থেকে রেহাই পান।
শিশুর জন্মের সাথে সাথে যদি একজন মা তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করে, তাহলে তার মাসিক আরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকবে। তাই এই প্রক্রিয়াটি একটি জন্মবিরতিকরন পদ্ধতি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি এই পদ্ধতি সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে এই নিয়মে একজন মা তার শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাইয়ে ৯৮-৯৯.৫% সময় তার পুনরায় গর্ভাবস্থা প্রতিরোধ করতে পারেন।
একজন মা, যিনি তার শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, এবং যার মাসিক এখনও বন্ধ আছে, তার আবার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভবনা মাত্র ১-২%। এই পদ্ধতি ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকরী। তবে এক্ষেত্রে মাকে শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত রাতসহ কয়েক ঘণ্টা পরপর বুকের দুধ দিতে হবে। এই পদ্ধতিটি যে যে অবস্থায় কাজ করবে সেগুলো হল-
১.আপনি আপনার শিশুকে শুধু এবং শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন - তার মানে আপনি আপনার সন্তানকে বুকের দুধ ছাড়া অন্য আর কিছুই দিচ্ছেন না - কোন পানি বা শক্ত খাবার খাওয়াচ্ছেন না।
২.আপনি আপনার শিশুকে বেশিরভাগ সময় বুকের দুধ দিচ্ছেন - তবে বুকের দুধের পাশাপাশি তাকে অন্য খাবার ও পানীয় দিচ্ছেন।
৩.আপনার শিশুর বয়স ৬ মাসের কম।
৪.আপনার মাসিক এখনও বন্ধ আছে।
আপনি যখন আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন তখন আপনার শরীরে প্রলাকটিন হরমোনের এর মাত্রা অনেক বেশি থাকে এবং আপনাকে গর্ভবতী হতে দেয় না। ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণুর পূর্ণতা ও মুক্তির জন্য এবং জরায়ুকে শিশুর বসবাসের যোগ্য করার জন্য যেই যেই হরমোন দরকার, প্রলাকটিন হরমোন তাদের নিঃসরণ বন্ধ করে রাখে। রক্তে প্রলাকটিন হরমোন এর মাত্রা বেশি রাখার জন্য আপনার যা যা করতে হবে তা হলঃ
১.আপনি আপনার শিশুকে যত সম্ভব বুকের দুধ খাওয়াবেন। যখন আপনার শিশু বুকের দুধ খাবেনা, তখনও তাকে কাছে রাখবেন, কারন নিপলের স্তিমুলেশন দ্বারা প্রলাকটিন হরমোন এর নিঃসরণ হয়।
২.শিশুকে বুকের দুধ বিশেষ করে রাতে খাওয়াবেন। যেই যেই হরমোন আপনাকে গর্ভবতী করতে পারে সেইগুলোর মাত্রা আপনার রক্তে রাতে অনেক বেশি থাকে। তখন বুকের দুধ খাওয়ালে প্রলাকটিন হরমোন বেশি নিঃসরণ হবে এবং সেই অন্যান্য হরমোন এর নিঃসরণ অনেক মাত্রায় কমিয়ে দিবে। রাতে শিশুকে প্রায় ৬ ঘণ্টা বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত !

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Bird Gadget