পাঠকের কাছে অনুরোধঃ এটা একটা শিক্ষনীয় ব্লগ।এই ব্লগ/ওয়েবকে চটি সাইট মনে করার কোন অবকাশ নাই। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা যৌনতা সম্পর্কে কি এবং কতটুকুই বা জানি? পশ্চিমা দেশের ১৬-১৮ বছরের ছেলে-মেয়েরা যৌনতার ব্যাপারে যা জানে, আমাদের দেশে বিয়ের ১৫ বছর পরে ও আমরা তা জানতে পারিনা, বুঝতে পারিনা। তাই আমার এই প্রচেষ্ঠা। এই ব্লগের লেখা দিয়ে যদি কারো কোন উপকার হয়, তাহলেই আমার কষ্ট সার্থক হবে। পুনশ্চঃ ব্লগটি চালু রাখতে, ডোনেশন করুন।আপনার ছোট্ট একটু কমেন্ট আমাকে অনেক প্রেরনা দেবে।দয়া করে Facebook এ একটা Like দিন। সবাইকে ধন্যবাদ।

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

মেনোপজ নিয়ে দু’টি কথা


দুরন্ত কৈশোর পেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ নারী হয়ে উঠতে শরীর ও মনে, দেহের ভেতরে-বাইরে নানা রকম পরিবর্তন হয়। ভেতরে এ পরিবর্তনের অন্যতম হলো রজঃস্রাব বা মাসিক। এটা সাধারণত ১২ থেকে ১৪ বছরের মেয়ের শুরু হয় যদিও পারিবারিক, সামাজিক, ভৌগোলিক, স্বাস্থ্য ও ভিন্ন পরিবেশে এর কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। আবার ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সে পূর্ণাঙ্গ নারীর জীবনে আসে বিরাট পরিবর্তন, সেটাও শরীরের ভেতরে ও বাইরে। এর মধ্যে অন্যতম হলো রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ। এটা হয় মেয়েলি হরমোনগুলোর নিঃসরণ কমে যাওয়ার জন্য।
সাধারণত ৪৫ থেকে ৫২ বছর বয়সে আবার এর উল্টোটা ঘটে, যেমন­ কারো ৪০-এর পর, আবার কারো ৫৪ বছর বয়স পর্যন্ত মাসিক হতে পারে।
এ সময়ে এ হরমোন (ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরোন) কমার জন্য মহিলাদের জীবনে শারীরিক ও মানসিক, পরিবর্তন হয় যা তাকে প্রচন্ড চাপের মধ্যে ফেলে।
শারীরিকঃ ত্বক মোটা ও রুক্ষ হতে থাকে। স্থূলতা বা ওজন বাড়ে। স্তন শুকিয়ে যেতে থাকে।
মানসিকঃ যারা একা, ছেলেমেয়ে ছাড়া অসুখী জীবনযাপন করেন তাদের পরিবর্তন বেশি হয়। অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা জন্মে যে, মেনোপজ হওয়া মানেই তাদের জীবন শেষ ও নারীত্ব শেষ। এমনকি স্বামীর ভালোবাসা শেষ।
এ সময়ে বিষণ্নতা, অকারণে উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, রুক্ষ ও খিটখিটে মেজাজ, অমনোযোগিতা, মাথা ধরা ইত্যাদি থাকে। খাবারে প্রচন্ড অরুচি, অনেক সময় বদহজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, হট ফ্ল্যাশ বা নাকে বা মুখে হঠাৎ গরম ভাপ লেগেছে মনে হয়। একে মেনোপজের প্রথম বা প্রধান লক্ষণও বলা যেতে পারে। এটি দিনে দুই-তিনবার বা রাতে যেকোনো সময় হতে পারে, যা তাকে ঘুমের মধ্যে প্রচণ্ড রকম ঘামিয়ে দিতে পারে।
মহিলা জননাঙ্গ শুকিয়ে যেতে থাকে। তা ছাড়া ঘন ঘন প্রস্রাব, স্তনে ব্যথা, গিরায় গিরায় ব্যথা, হাড় নরম হয়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা বেশি হয়।
চিকিৎসাঃ প্রথম ধাপঃ এ সময়ে সহানুভূতির সাথে তাদের সাপোর্ট দিতে হবে। বুঝাতে হবে এটা জীবনের একটা ধাপ বা পরিবর্তন মাত্র, জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয়। যাদের হট ফ্ল্যাশ বা ঘাম বেশি হয় তাদের চা, কফি, বিছানায় গরম কাপড় ব্যবহার বাদ দিতে হবে। নিয়মিত বা পরিমিত ব্যায়াম, ঠাণ্ডা পানীয় তাদের স্বস্তি দিতে পারে অনেকটা।
দ্বিতীয় ধাপঃ প্রয়োজনে ঘুমের ওষুধ, প্রেসার বা ডায়াবেটিস বেশি হলে এর ওষুধ, নার্ভাসনেস কমানোর জন্য ট্রাংকোলাইজার ও বিটা ব্লকার ভালো কাজ করে থাকে।
তৃতীয় ধাপঃ যখন সমস্যা এতটাই প্রকট হয় অথবা প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চিকিৎসায় সমাধান হচ্ছে না তখন হরমোন বা এইচআরটি’র প্রয়োজন হতে পারে। এটা দিতে হবে তখনই যখন হরমোন প্রয়োগে নিষেধ নেই এবং যিনি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে জেনে নিতে রাজি হন ও সময় মতো ফলোআপে রাজি হন। জরায়ু না থাকলে সর্বাপেক্ষা কম ডোজ ইস্ট্রোজেন এবং জরায়ু থাকলে সাথে শেষ ১০ দিন প্রজেস্টেরোন দিতে হবে। অনেক সময় লোকাল ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের হাড় দুর্বলতা বা হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা আছে তাদের সার্ম (সিলেক্টিভ ইস্ট্রোজেন রিসেপটর মডুলেটর) খেয়ে উপকার পেতে পারেন। তা ছাড়া ভিটামিন ই, ডি, ক্যালসিয়াম, ছোট মাছ, শাকসবজি, ফলমূল খুব উপকারে আসবে। তেল ও চর্বিজাতীয় খাবার বাদ দেয়া সব দিক থেকেই মঙ্গলজনক। যেহেতু একজন মহিলার জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় মেনোপজের পরে পার হয় এবং এ সময়ই যাবতীয় উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ সময় তাই তাকে এ সময় সব দিক থেকে সর্বসেরা কাউন্সিলিং ও চিকিৎসা দেয়া বাঞ্ছনীয়।
নেট থেকে 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Bird Gadget