‘আমার কারখানায় আসতে আর ভাল্লাগতাসে না। ডেইলি চিন্তা করি, আর কামে যামু না—এই শ্যাষ। রাইত অইলে মনে হয়, খামু কী! মনে অয় কাশেমরে মাইরালাই। একদিন আমি সত্যিই ওরে শ্যাষ করুম।’
কথাগুলো যৌন নির্যাতনের শিকার ১১ বছরের বালক জীবনের (ছদ্মনাম)। সে নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানায় কাজ করে। কাশেম তার সহকর্মী, তবে বয়সে বড় এবং কারখানার পুরোনো লোক। জানা গেছে, এই কারখানার কর্মী বেশ কয়েকটি শিশুকে সে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করে আসছে। জীবন তার ১৪ বছর বয়সী বড় ভাই আর মা দুজনের কাছেই সমস্যার কথা বলেও পাত্তা পায়নি। ভাই বলেছে, ‘তুই কি মাইয়া মানুষ?’ আর কাজে যেতে না চাওয়ায় মা বলেছেন, ফাঁকি দেওয়ার মতলবেই এই অজুহাত দেখাচ্ছে জীবন। ওর ভাই তো কখনো কোনো অভিযোগ করেনি।
জীবনের মতো নীরবে নির্যাতন সইতে হচ্ছে দেশের অনেক শিশুকেই। এরা মূলত দরিদ্র, বিপর্যস্ত পরিবারের সন্তান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শিশুরা শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের স্বাস্থ্যের দিক থেকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এতে শিশুর যৌনবাহিত রোগ হতে পারে। এ ছাড়া আঘাত ও আঘাতজনিত রক্তপাত থেকে রক্ত সংক্রমণ হয়ে শিশু প্রাণ পর্যন্ত হারাতে পারে।
এ ধরনের পীড়নের শিকার শিশুদের মানসিক বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিশুর মধ্যে তীব্র বিষণ্নতার সৃষ্টি হয়। এই শিশুরা সমাজের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ নিয়ে বড় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হলে সে নিজেও নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
গত মার্চে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বাংলাদেশের শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন ও অন্যান্য নিপীড়ন বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক তেরেস ব্লঁশে বলেছেন, কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শিশু সুরক্ষায় প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ছেলেশিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হলে কোনো আইনগত সেবা পায় না। এ দেশের সমাজ এখনো মানতে চায় না যে ছেলেশিশুরাও যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ থাকলেও দেশে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার শিশুর সংখ্যা কত, সে সম্পর্কে সরকার বা বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছে কোনো তথ্য নেই। শিশুদের আইনগত সহায়তা দেয় এমন সংগঠনগুলো বলছে, বিদ্যমান আইনে সব ধরনের নির্যাতন থেকে শিশুদের রক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও, বিশেষ করে ছেলেশিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ বা বাস্তবায়নের উদ্যোগ চোখে পড়ে না। সংগঠনগুলো বলছে, এর অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হলো, বিষয়টি এখনো সমস্যা হিসেবে না দেখার প্রবণতা। উল্লেখ্য, সরকার শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করেছে। শিশুদের সুরক্ষায় আরও রয়েছে শিশু আইন, ১৯৭৪; নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (ট্রাইব্যুনাল) আইন; শ্রম আইন, ২০০৬।
বাংলাদেশে শিশুদের সুরক্ষায় অনেক আইন আছে। কিন্তু এ আইনগুলো করা হয়েছে মূলত মেয়েশিশুদের কথা মাথায় রেখে। ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ২০০৮ সালে ইউনিসেফ আয়োজিত শিশুদের যৌন নির্যাতনবিষয়ক সর্বশেষ সম্মেলনের পর বাংলাদেশ অনেক কিছু করার প্রস্তুতি নিলেও তেমন বাস্তব উদ্যোগ নেই।
যারা শিকার হচ্ছে: শুধু পথশিশু নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেশিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ নামের একটি সংগঠন পরিবারের ভেতর যেসব শিশু অরক্ষিত রয়েছে, তাদের নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি জানায়, একজন আইনজীবী বাবা তাঁর দুটি যমজ পুত্রসন্তানকে নিয়ে তাঁদের কার্যালয়ে এসেছিলেন। শিশু দুটি তখন বেশ অসুস্থ। গৃহশিক্ষক পড়ানোর নামে দরজা বন্ধ করে তাদের ওপর বেশ কিছুদিন ধরে নির্যাতন চালাচ্ছিল। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা ছাত্রাবাসেও নির্যাতনের শিকার হয়।
পরিবারে থাকা শিশুরা কোনোভাবে রক্ষা পেলেও কর্মজীবী শিশু, বিশেষ করে যারা পথে পথে থাকে, তাদের কোনো রকম নিরাপত্তা নেই। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে কলকারখানার কর্মী ও পথশিশুরা কীভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তার বেশ কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। ইনসিডিন বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কিছুদিন আগে ‘দ্য বয়েজ অ্যান্ড দ্য বুলিজ—এ সিচুয়েশনাল অ্যানালিসিস রিপোর্ট অন প্রস্টিটিউশন অব বয়েজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এতে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ফকিরাপুল, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, সদরঘাট, গুলিস্তান, মিরপুর ও শাহবাগ এবং চট্টগ্রামের রেলওয়ে স্টেশন, বাদুড়তলা এলাকার পথশিশুদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
দেখা গেছে, ওই প্রতিবেদনে উল্লিখিত শিশুদের বেশির ভাগই অত্যন্ত দরিদ্র, বিপর্যস্ত শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান। এতে কমলাপুর স্টেশনে থাকা একটি শিশুকে উদ্ধৃত করা হয়েছে এভাবে, ‘যত দিন বাঁইচা আছি, আমারে কমলাপুরেই থাকতে হইব। মরলে আজিমপুরে গেলে তয় শান্তি।’
অপর এক শিশু বলে, ‘লোকটা আমারে কাম দিবো বইলা নিয়া যায়। হ্যার পর অত্যাচার করে। ভয় দেখায়া কয়, চিল্লান দিলে কাম দিবো না। আমি কিছুই কইতে পারলাম না। খালি কানতে থাকলাম।’
সুরক্ষায় উদ্যোগ সামান্য: ছেলেশিশুদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার খুব একটা উদ্যোগ চোখে পড়ে না। অপরাজেয় বাংলাদেশ, ইনসিডিন বাংলাদেশ, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স কাজ করছে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি সম্প্রতি একটি বিভাগ সৃষ্টি করেছে, যারা শুধু পথশিশুদের নিয়ে কাজ করবে। ইনসিডিনের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা পথশিশুদের দুটি কেন্দ্র চালাচ্ছেন, যেখানে ১২০টি ছেলেশিশু রাতের বেলা ঘুমায়। উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু শুধু কমলাপুর রেলস্টেশন ও তার আশপাশেই ১৭ হাজার মানুষ যেখানে-সেখানে ঘুমায়। পথশিশুদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ছে।’
ছেলেশিশুদের সুরক্ষায় এখন পর্যন্ত সরকারেরও বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেই। নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেশিশুদের জন্য আলাদা আইনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’ তাঁর মতে, পুনর্বাসনের যে উদ্যোগ চলছে, তা বাস্তবায়িত হলে অনেক শিশুই সুরক্ষা পাবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, ইউনিসেফের সঙ্গে সহযোগিতায় পাঁচ শ শিশুকে প্রতিমাসে এক হাজার পাঁচ শ টাকা দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা নিয়মিত স্কুলে যায়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ও ‘আমাদের শিশু’ নামের একটি প্রকল্প চালাচ্ছে।
কথাগুলো যৌন নির্যাতনের শিকার ১১ বছরের বালক জীবনের (ছদ্মনাম)। সে নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানায় কাজ করে। কাশেম তার সহকর্মী, তবে বয়সে বড় এবং কারখানার পুরোনো লোক। জানা গেছে, এই কারখানার কর্মী বেশ কয়েকটি শিশুকে সে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করে আসছে। জীবন তার ১৪ বছর বয়সী বড় ভাই আর মা দুজনের কাছেই সমস্যার কথা বলেও পাত্তা পায়নি। ভাই বলেছে, ‘তুই কি মাইয়া মানুষ?’ আর কাজে যেতে না চাওয়ায় মা বলেছেন, ফাঁকি দেওয়ার মতলবেই এই অজুহাত দেখাচ্ছে জীবন। ওর ভাই তো কখনো কোনো অভিযোগ করেনি।
জীবনের মতো নীরবে নির্যাতন সইতে হচ্ছে দেশের অনেক শিশুকেই। এরা মূলত দরিদ্র, বিপর্যস্ত পরিবারের সন্তান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শিশুরা শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের স্বাস্থ্যের দিক থেকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এতে শিশুর যৌনবাহিত রোগ হতে পারে। এ ছাড়া আঘাত ও আঘাতজনিত রক্তপাত থেকে রক্ত সংক্রমণ হয়ে শিশু প্রাণ পর্যন্ত হারাতে পারে।
এ ধরনের পীড়নের শিকার শিশুদের মানসিক বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিশুর মধ্যে তীব্র বিষণ্নতার সৃষ্টি হয়। এই শিশুরা সমাজের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ নিয়ে বড় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হলে সে নিজেও নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
গত মার্চে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বাংলাদেশের শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন ও অন্যান্য নিপীড়ন বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক তেরেস ব্লঁশে বলেছেন, কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শিশু সুরক্ষায় প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ছেলেশিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হলে কোনো আইনগত সেবা পায় না। এ দেশের সমাজ এখনো মানতে চায় না যে ছেলেশিশুরাও যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ থাকলেও দেশে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার শিশুর সংখ্যা কত, সে সম্পর্কে সরকার বা বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছে কোনো তথ্য নেই। শিশুদের আইনগত সহায়তা দেয় এমন সংগঠনগুলো বলছে, বিদ্যমান আইনে সব ধরনের নির্যাতন থেকে শিশুদের রক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও, বিশেষ করে ছেলেশিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ বা বাস্তবায়নের উদ্যোগ চোখে পড়ে না। সংগঠনগুলো বলছে, এর অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হলো, বিষয়টি এখনো সমস্যা হিসেবে না দেখার প্রবণতা। উল্লেখ্য, সরকার শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করেছে। শিশুদের সুরক্ষায় আরও রয়েছে শিশু আইন, ১৯৭৪; নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (ট্রাইব্যুনাল) আইন; শ্রম আইন, ২০০৬।
বাংলাদেশে শিশুদের সুরক্ষায় অনেক আইন আছে। কিন্তু এ আইনগুলো করা হয়েছে মূলত মেয়েশিশুদের কথা মাথায় রেখে। ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ২০০৮ সালে ইউনিসেফ আয়োজিত শিশুদের যৌন নির্যাতনবিষয়ক সর্বশেষ সম্মেলনের পর বাংলাদেশ অনেক কিছু করার প্রস্তুতি নিলেও তেমন বাস্তব উদ্যোগ নেই।
যারা শিকার হচ্ছে: শুধু পথশিশু নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেশিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ নামের একটি সংগঠন পরিবারের ভেতর যেসব শিশু অরক্ষিত রয়েছে, তাদের নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি জানায়, একজন আইনজীবী বাবা তাঁর দুটি যমজ পুত্রসন্তানকে নিয়ে তাঁদের কার্যালয়ে এসেছিলেন। শিশু দুটি তখন বেশ অসুস্থ। গৃহশিক্ষক পড়ানোর নামে দরজা বন্ধ করে তাদের ওপর বেশ কিছুদিন ধরে নির্যাতন চালাচ্ছিল। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা ছাত্রাবাসেও নির্যাতনের শিকার হয়।
পরিবারে থাকা শিশুরা কোনোভাবে রক্ষা পেলেও কর্মজীবী শিশু, বিশেষ করে যারা পথে পথে থাকে, তাদের কোনো রকম নিরাপত্তা নেই। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে কলকারখানার কর্মী ও পথশিশুরা কীভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তার বেশ কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। ইনসিডিন বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কিছুদিন আগে ‘দ্য বয়েজ অ্যান্ড দ্য বুলিজ—এ সিচুয়েশনাল অ্যানালিসিস রিপোর্ট অন প্রস্টিটিউশন অব বয়েজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এতে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ফকিরাপুল, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, সদরঘাট, গুলিস্তান, মিরপুর ও শাহবাগ এবং চট্টগ্রামের রেলওয়ে স্টেশন, বাদুড়তলা এলাকার পথশিশুদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
দেখা গেছে, ওই প্রতিবেদনে উল্লিখিত শিশুদের বেশির ভাগই অত্যন্ত দরিদ্র, বিপর্যস্ত শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান। এতে কমলাপুর স্টেশনে থাকা একটি শিশুকে উদ্ধৃত করা হয়েছে এভাবে, ‘যত দিন বাঁইচা আছি, আমারে কমলাপুরেই থাকতে হইব। মরলে আজিমপুরে গেলে তয় শান্তি।’
অপর এক শিশু বলে, ‘লোকটা আমারে কাম দিবো বইলা নিয়া যায়। হ্যার পর অত্যাচার করে। ভয় দেখায়া কয়, চিল্লান দিলে কাম দিবো না। আমি কিছুই কইতে পারলাম না। খালি কানতে থাকলাম।’
সুরক্ষায় উদ্যোগ সামান্য: ছেলেশিশুদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার খুব একটা উদ্যোগ চোখে পড়ে না। অপরাজেয় বাংলাদেশ, ইনসিডিন বাংলাদেশ, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স কাজ করছে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি সম্প্রতি একটি বিভাগ সৃষ্টি করেছে, যারা শুধু পথশিশুদের নিয়ে কাজ করবে। ইনসিডিনের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা পথশিশুদের দুটি কেন্দ্র চালাচ্ছেন, যেখানে ১২০টি ছেলেশিশু রাতের বেলা ঘুমায়। উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু শুধু কমলাপুর রেলস্টেশন ও তার আশপাশেই ১৭ হাজার মানুষ যেখানে-সেখানে ঘুমায়। পথশিশুদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ছে।’
ছেলেশিশুদের সুরক্ষায় এখন পর্যন্ত সরকারেরও বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেই। নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেশিশুদের জন্য আলাদা আইনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’ তাঁর মতে, পুনর্বাসনের যে উদ্যোগ চলছে, তা বাস্তবায়িত হলে অনেক শিশুই সুরক্ষা পাবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, ইউনিসেফের সঙ্গে সহযোগিতায় পাঁচ শ শিশুকে প্রতিমাসে এক হাজার পাঁচ শ টাকা দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা নিয়মিত স্কুলে যায়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ও ‘আমাদের শিশু’ নামের একটি প্রকল্প চালাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন